- ইতিহাস
গঙ্গাধর মজুমদার হাট উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানকারী একটি এমপিওভূক্ত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বিদ্যালয় পরিচিতিঃ
ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার জি.এম.হাট ইউনিয়নের শরিফপুর গ্রামে ১৯২৬ সালে গঙ্গাধর মজুমদার হাট (জি এম হাট) উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। বিদ্যালয়টি ফেনী শহরের অদূরে সবুজ-ছায়াঘেরা সু-প্রাচীর বেষ্টিত, মনোরম পরিবেশে পাঠদানযোগ্য, প্রাচীন, প্রায় শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী একটি আদর্শ বিদ্যালয়। প্রতিবছর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ সহ কৃতিত্ত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করে আসছে। এছাড়াও শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতায় উপজেলা, জেলা এমনকি বিভাগীয় পর্যায়েও অংশগ্রহণ করে অনেক কৃতিত্ব অর্জন করে আসছে যা বিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সুনাম ধরে রেখেছে।
স্মরণীয় ব্যক্তিত্বঃ
স্থানীয় জমিদার ও প্রভাবশালীব্যক্তি প্রয়াত গঙ্গাধর মজুমদারের সুযোগ্য উত্তরাধিকারী স্বর্গীয় বাবু গিরিশচন্দ্র মজুমদার মহোদয়ের দানকৃত ১.৩৪ একর জমির উপর ১৯২৬ সালে মাইনর স্কুল হিসাবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে সচেতন এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সাহায্য ও সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিদ্যালয় ক্রমে বিকশিত হয়ে ১৯৬৮ সালে পূর্ণাঙ্গ উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপ নেয়।
তৎপরবর্তী সময়ে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে দিয়ে তৎকালীন সভাপতি নুরপুর নিবাসী মরহুম অহিদুর রহমান ভূঁইয়া ও মরহুম মীর একেএম সিরাজুল ইসলাম, আবদুর রশিদ মাস্টার, কাজী আমিনুল ইসলাম (টুকু মাষ্টার), লকিয়ত উল্যাহ ভূঁইয়া, ফজলুর রহমান , আবদুল গণি ভূঞা (গনু মুহুরী), ফয়েজ উল্যাহ, কাজী বারিক, লক্ষ্মীপুর নিবাসী আশ্রাফ আলী ভূঁঞা, এ কে এম নুরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, শরীফপুর নিবাসী স্বর্গীয় মাষ্টার জগদীশ চন্দ্র মজুমদার, সৈয়দুজ্জামান, ডাঃ সতীশ চন্দ্র সরকার, পাঠান নগর নিবাসী রাজা মিয়া, পূর্ব বশিকপুর নিবাসী মকবুল আহাম্মদ এবং সোনাপুর নিবাসী ছিদ্দিক উল্যাহ, সুলতান আহম্মদ মজুমদার প্রমুখ বিদ্যালয়ের হিতার্থে এগিয়ে আসেন এবং বিদ্যালয়কে বিভিন্ন দৈন্যদশা থেকে উত্তরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অতঃপর আসে ১৯৮৯ সাল, যা বিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত হয় কারণ, এ সময়কালে এগিয়ে আসেন নুরপুর গ্রামের প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মীর একেএম গোলাম কাদের, মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সহযোদ্ধা ও তৎকালীন মন্ত্রী লেঃ কর্ণেল (অবসরপ্রাপ্ত) জনাব জাফর ইমাম বীর বিক্রমের অনুরোধে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্বগ্রহণ করে বিদ্যালয়ের হাল ধরেন। বিদ্যালয়ের উন্নতিরপালে হাওয়া লাগার শুরু এখানেই। নিজ তহবিল থেকে অকাতরে দান এবং প্রতিষ্ঠিতজনদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়কে দ্রুত উন্নতির দিকে নেয়া শুরুকরলে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তির মধ্যে রয়েছে নিজ তহবিল, এলাকার ধনাঢ়্যব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা এবং তাঁরই ছোটভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আলহাজ্ব মীর এএইচএম গোলাম কবিরের নিটক থেকে নগদ একলক্ষ টাকা অনুদান নিয়ে বিল্ডিং তৈরীপূর্বক পাঠাগার স্থাপন করে মরহুম আবদুর রশিদ মাস্টারের নামে উৎসর্গ করেন যা “আবদুর রশিদ মাস্টার স্মৃতি পাঠাগার” নামে প্রতিষ্ঠিত, তাঁরই জননী জনাব আলহাজ তাজের নেছার নামে ৫০ শতক জমি ক্রয় করে বিদ্যালয়কে দান করেন, যা বর্তমানে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর পার্শ্বে পুকুর ও জমি হিসেবে স্থিত আছে, তাঁর মরহুম পিতা জনাব এ কে এম সিরাজুল ইসলামের নামে তৈরি করেন সুবিশাল মিলনায়তনসহ বিদ্যালয়ের পাঠোন্নয়নে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁরই ছোটভাই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জনাব আলহাজ্ব মীর এএইচএম গোলাম কবির বিদ্যালয়কে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করতে থাকায় বিদ্যালয় দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়। বিশেষত অবকাঠামোগত দিক থেকে বৈপ্লবিক উন্নতি সাধিত হয়। যেমন, নিজ তহবিল থেকে দুই লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের মূল ফটক নির্মাণ, কাঁটাতারের ব্যবস্থা রাখাসহ সুদীর্ঘ সীমানাপ্রাচীর নির্মান, বিদ্যালয়ে মাঠের চারপাশে ড্রেন তৈরি, মাঠের উত্তর পার্শ্বে সুদীর্ঘ ও সুশোভিত বাগান তৈরিসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জনাব মীর এএইচএম গোলাম কবির, নিজ অর্থায়নে ভবন তৈরি করে সাবেক সভাপতি, তাঁরই বড়ভাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মীর একেএম গোলাম কাদেরের নামে বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯০ সালে পঞ্চাশ হাজার টাকা দান করে বিদ্যালয়ের আজীবন দাতা সদস্যের স্বীকৃতিপান তিনি। ২০০৮সালে নিজ তহবিল থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে বালি দিয়ে মাঠ ভরাট করতঃ মাঠকে খেলার উপযোগি করে তোলেন এবং তাঁর পিতার নামে একটি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করেছিলেন, যে টুর্ণামেন্টে দেশী খেলোয়াড়দের পাশাপাশি বিদেশী খেলোয়াড়রাও যোগদিলে দেশের গন্ডি পেরিয়ে অত্রাঞ্চলের নাম বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও তিনি আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্ণামেন্ট অত্র বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করলে বিদ্যালয়ের পরিচিতি ও শিক্ষার্থী সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়, যা জনাব আলহাজ্ব মীর এ এইচ এম গোলাম কবিরের অনন্য কীর্তি। সম্প্রতি তাঁর একক অর্থায়নে বিদ্যালয়ের পুকুরের পশ্চিমপার্শ্বে প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের জন্য “আলহাজ্ব মীর এ এচই এম গোলাম কবির পাঞ্জেগানা মসজিদ” নামে একটি মসজিদ নির্মান করছেন এবং দ্রুত গতিতে যে মসজিদের কাজ এগিয়ে চলছে এ ছাড়াও চলতি বছর একলক্ষ টাকা অনুদান দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠ পুনঃ সংস্কার করে খেলার উপযোগি করে তোলেন। সভাপতি মহোদয়ের সহধর্মীনী জনাব নিগার সুলতানাকে ২,০০,০০০/- টাকা দিয়ে আজীবন দাতা সদস্য এবং শুভাকাঙ্খী জনাব অজিত চন্দ্র সরকারকে ২০,০০০/- টাকা দিয়ে এককালীন দাতা সদস্য করেন।
শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে সভাপতি মহোদয় নিজস্ব অর্থায়নে ২০২৪ সনের এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫.০০ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নগদ টাকা, ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। জনাব আলহাজ্ব মীর এ এইচ এম গোলাম কবিরের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যগণ বিদ্যালয় তহবিল হতে এককাপ চা-ও পান না করার এক ব্যতিক্রমি ও অনন্য নজির স্থাপন করেন, যা আজও বিদ্যমান। গঙ্গাধর মজুমদার হাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মীর পরিবারের অবদান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন “রেজুলেশনের এমন কোনো পাতা নেই, যে পাতায় মীর পরিবারের দান/অনুদান নেই।”
- সভাপতির বার্তা

ডাঃ মোহাম্মদ আজিজ উল্যাহ
বিস্তারিত...
বিস্তারিত...
- প্রধান শিক্ষকের বার্তা

মোহাম্মদ সিরাজুল হক
বিস্তারিত...
বিস্তারিত...
- গুরুত্বপূর্ণ লিংক
- গুগল ম্যাপ
- অফিসিয়াল ফ্যান পেইজ
- জাতীয় সংগীত